ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, দ্য ঢাকা রিপোর্ট ডটকম:
সিরিয়ার চলমান সহিংসতা নিরসনে একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বিশ্বশক্তিগুলো। বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি এড়ানোর লক্ষ্যে সিরিয়ায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এ লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে সিরীয় শান্তি আলোচনা শুরু হয়। তবে আলোচনা চলাকালে সিরিয়ার আলেপ্পোতে সরকারবিরোধীদের ওপর রাশিয়া ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর উপর্যুপরি হামলার মুখে ওই আলোচনা ভেস্তে যায়।
চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতে, সিরিয়ার সরকারবিরোধীদের নির্মূলের জন্যই এই তিন সপ্তাহ সময় নিতে চায় রাশিয়া।
বাসমা কদমানি নামে শান্তি আলোচনায় যোগ দেওয়া বিরোধী গ্রুপের এক সদস্য জানিয়েছেন, আলেপ্পোতে সরকারি বাহিনী যা করছে তার অর্থ হলো ‘আলোচনার কোনও মানে হয় না, বাড়ি চলে যাও।’
সিরিয়ায় গত ৫ বছর ধরে সরকারি বাহিনী ও সরকারবিরোধীদের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষ।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ আলেপ্পোয় রাশিয়া ও আসাদ বাহিনীর হামলায় শিশুসহ নিহত হয়েছেন অর্ধসহস্রাধিক মানুষ। গৃহহীন হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি।
সিরিয়ান সেন্টার ফর পলিসি রিসার্স জানিয়েছে, সিরিয়ায় গত ৫ বছর ধরে সরকারি বাহিনী ও সরকারবিরোধীদের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। আর গৃহযুদ্ধে মানুষের গড় আয়ু প্রায় ১৫ বছর কমে গেছে।
দেড় বছর আগে জাতিসংঘের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে সিরিয়ায় আড়াই লাখ মানুষের প্রাণহানির তথ্য দেওয়া হয়েছিল।
সেন্টার ফর পলিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটির মোট জনসংখ্যার সাড়ে ১১ শতাংশ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে কিংবা তারা আহত হয়েছেন। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে আহত মানুষের সংখ্যা ১৯ লাখ।
২০১৫ সালে সিরিয়ায় প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমে ৫৫.৪ এ দাঁড়িয়েছে। ২০১০ সালে দেশটির মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭০ বছর। এছাড়া ৫ বছরের গৃহযুদ্ধে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫৫ বিলিয়ন ডলারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গৃহযুদ্ধে নিহতদের মধ্যে ৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে সংঘাতের কারণে। আর অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ ও খাদ্য স্বল্পতা এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন ৭০ হাজার মানুষ। সূত্র: বিবিসি।