ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে বীজতলাসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজির জমি পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। এতে করে অনেকটা বিপাকে পড়েছিলেন এখানকার চাষিরা। হঠাৎ প্রচুর বৃষ্টির কারণে জালকুড়ির কৃষিজমিগুলো প্রায় ৮-১০ দিন পানির নিচে নিমজ্জিত ছিল। তারপরও জালকুড়িতে শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক পরিমানে আবাদ হয়েছে। বাজারে বর্তমানে মৌসুমি সবজিগুলোর রয়েছে ব্যাপক চাহিদা লোকসান কাটিয়ে চাষিদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায়। জালকুড়িতে শীতকালীন সবজির মধ্যে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক খুব বেশি চাষ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ সবজি গুলো প্রতি বছর অল্প পরিসরে চাষ করা হত। তবে লালশাক চাষটাই এখানে বেশি হয়। শীতকালীন সবজির মধ্যে লালশাক চাষ করে প্রত্যেকেই তাদের খরচ পুসিয়ে দ্বিগুনেরও বেশি লাভবান হচ্ছেন।
কথা হয় শফিকুর রহমান নামে এক কৃষকের সাথে। তিনি জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। শাক-সবজি চাষাবাদের জন্য তার মোট ২ বিঘা জমি আছে। তিনি দুই বিঘা জমিতেই লাল শাক চাষ করেন। লাল শাক চাষ করতে তার প্রতি বিঘা জমিতে ১২-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি প্রতিবছর চাষাবাদ করে ৬-৮ বার শাক-সবজির দেখা পান। তবে এবার শীতের শুরুতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে সে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। লালশাক চাষ করে প্রতি বিঘা জমি থেকে এক একবার ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ করেন বলে জানান তিনি।
সালাম শেখ নামে জালকুড়ির আরেক কৃষকের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, আমার যত জমি আছে সব জমিতে লালশাক আবাদ করেছি। ৫ বিঘা জমিতে লালশাক আবাদ করে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ করেছি। এ লালশাক আবাদে খরচ কম হয়। তবে ফলন এবং লাভ বেশি হয়। তাছাড়া বীজ বপনের ২৫ দিন পূর্বেই লালশাক বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। ফলে পাইকারি মূল্যে তিনি তা বিক্রি করে দেন।
আরেক কৃষক সগীর আলী জানান, এখন সারা মাস লাল শাক চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। কারণ লাল শাক চাষাবাদে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম। এখানে যেমন আমাদের লাভ হয় আবার প্রতি মাসে মাসে ফলনও পাওয়া যায়।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো: তাজুল ইসলাম জানান, চাষাবাদ করার পূর্বে আমরা কৃষকদের শুধুমাত্র পরামর্শ সেবাটাই দিয়ে থাকি। আর সরকার থেকে যদি কৃষকদের জন্য কোনো আর্থিক অনুদানসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার দেওয়া হয় তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরী করে তাদের মাঝে সুষমভাবে বন্টন করে থাকি।
আপনার মতামত লিখুন :